হরিণের কস্তুরী দাম কত ২০২৪
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা হরিণের কস্তুরীর দাম কত এই সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের আলোচনা। হরিণের কস্তুরী হলো এক ধরণের বিশেষ সুগন্ধী। যা উৎপন্ন হয় হরিণের নাভী থেকে। তবে নারী হরিণ নয়, পুরুষ হরিণের নাভিতে পাওয়া যায় এই মৃগ। কস্তুরী বিশেষ ধরনের প্রাণীজ সুগন্ধি। হরিণের নাভি থেকে পাওয়া যায় এই কস্তুরী, এটি মহামূল্যবান সুগন্ধি হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে, কস্তুরীর এক তিল পরিমাণ কোনো বাড়িতে পড়লে বহু বছর সেখানে এর ঘ্রাণ থেকে যায়। অনেকেই জানতে চায় হরিণের নাভী থেকে তৈরি এই বিশেষ কস্তুরীর দাম কত। তাই আজকে আমরা আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবো হরিণের কস্তুরীর দাম কতঃ
হরিণের কস্তুরী দাম কত
কস্তুরী আতর প্রাচীন কাল থেকে একটি জনপ্রীয় সুগন্ধী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রাণিজ পণ্যগুলোর মধ্যে একটি। বর্তমানে মাত্র ৩ মিলি কস্তুরীর দাম ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। এছাড়া ১০ মিলি হরিণের কস্তুরীর দাম ৭৫০ থেকে ১০৫০ টাকা। ৫০০ মিলি কস্তরীর দাম ৩৫ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এবং ১০০০ মিলি হরিণের কস্তরীর দাম ৭৫ হাজার টাকা থেকে প্রায় ১ লক্ষ টাকা। তবে এটির দাম একেক দেশে একেক রকম হয়ে থাকে।
হরিণের কস্তুরী উপকারিতা
পুরুষ হরিণের নাভী থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে বিশেষ এই কস্তুরী। ১ মিলিগ্রাম কস্তুরী তৈরি করতে প্রায় ২০০০ হরিণ শিকার করতে হয় ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে হরিণের সংখ্যা। এই কস্তুরীর অনেক উপকার রয়েছে। অনেকেই হরিণের কস্তুরীর উপকারিতা সম্পর্কে জানে না। তাই আজকে আমরা আপনাদের জানিয়ে দিবো হরিণের কস্তুরীর উপকারিতা। নিচে হরিণের কস্তুরীর উপকারিতা দেওয়া হলো।
হরিণের কস্তুরীর উপকারিতাঃ হরিণের কস্তুরী মানবদেহে অনেক উপকার করে থাকে। হরিণের কস্তুরী ভগ্ন স্বাস্থ্য ও শক্তি পুনরুদ্ধার করে রক্ত উত্তেজক এবং বেদনানাশক হিসেবে কাজ করে। হরিণের কস্তুরী জ্বরজনিত খিঁচুনী, সন্ন্যাস রোগ বা স্নায়ুবিক চেতনাহীনতা, পেটে তীব্র ব্যাথা,আঘাত জনিত ক্ষতের তীব্র ব্যাথা, স্পর্শজ্ঞান শূন্যতা বা অসাড়ত্ব, শারীরিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের তীব্র ব্যাথা সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও হরিণের কস্তুরী আরো অনেক উপকার করে থাকে।
হরিণের কস্তুরী কোথায় পাওয়া যায়
হরিণের কস্তুরী বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশে এই হরিণের কস্তুরী খুব কম পাওয়া যায়। হরিণের কস্তুরী সাধারণত আফগানিস্থান, পাকিস্তান, তিব্বত, নেপাল ভূটান এবং উত্তর ভারতে বেশি পাওয়া যায়। এই হরিণ অন্য হরিণ থেকে আলাদা নয়। অত্যন্ত শীতল পার্বত্য পরিবেশে বাস করায় এদের লোম সরু না হয়ে অত্যন্ত মোটা ও পালকের মতো হয়। এ ছাড়া পামির মালভূমির গ্রন্থি পর্বতমালায় তৃণভূমি সমৃদ্ধ উপত্যকায় এই হরিণ পাওয়া যায়। কস্তুরী মৃগের ওপরের মাড়ি থেকে গজদন্তের মতো দুটি দাঁত ছোট আকারে বের হয়। এ ধরনের দাঁত সব প্রজাতির হরিণের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এই দেখেই কস্তুরী মৃগ সনাক্ত করা হয়। এই প্রজাতির হরিণ আত্মরক্ষায় পটু। কিন্তু তারা নিজেদের লুকিয়ে রাখতে পারে না, কারণ এদের দেহের তীব্র ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণ অনুসরণ করে শিকারি ঠিকই এদের সন্ধান পেয়ে যায়। এই হরিণের নাভি থেকেই মূলত এই সুগন্ধি দ্রব্য সংগ্রহ করা হয়। পুরুষ হরিণের নাভি মুখের গ্রন্থিতে এক বিশেষ ধরনের কোষের জন্ম হয়। এই কোষ যখন পূর্ণতা লাভ করে তখন এ থেকেই সুঘ্রাণ বের হতে থাকে। হরিণের ১০ বছর বয়সে সুগন্ধি কোষ পূর্ণতা লাভ করে। তবে মজার ব্যাপার হলো, যে হরিণটির নাভিতে এই কোষের জন্ম, সে নিজে কিছুই বুঝতে পারে না। তার নাকে যখন এই সুগন্ধ এসে লাগে তখন সে পাগলের মতো ছুটতে থাকে এই সুঘ্রাণের উৎসের সন্ধানে। অথচ সে বুঝতে পারে না যে, সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে তার নিজের দেহ থেকেই। এই হরিণের দশ বছর বয়সে নাভির গ্রন্থি পরিপক্ব হয়। এ সময় হরিণটিকে হত্যা করে নাভি থেকে তুলে নেওয়া হয় পুরো গ্রন্থিটি। তারপর রোদে শুকানো হয়। একটা পূর্ণাঙ্গ কস্তুরী গ্রন্থির ওজন প্রায় ৬০-৬৫ গ্রাম। কস্তুরীকোষের বাইরের দিকটায় থাকে এলোমেলো কিছু লোম। সেগুলো ছাড়িয়ে শুকনো কোষটিকে যখন জলেতে ভেজানো হয়, তখন পরিষ্কার কস্তুরী বেরিয়ে আসে।
আশা করি আমাদের এই পোস্ট থেকে আপনারা হরিণের কস্তুরীর দাম, হরিণের কস্তুরীর উপকারিতা, এবং হরিণের কস্তুরী কোথায় পাওয়া যায় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পেড়েছেন। আমাদের এই পোস্টে হরিণের কস্তুরীর সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া আছে। আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পুড়ো পোস্টটি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।