ইসবগুলের ভুসির দাম কত ২০২৪
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন।আজকে আমরা ইসবগুলের ভুসির দাম সম্পর্কে আলোচনা করবো। ইসবগুলের ভুসি অনেক উপকারি একটি ভেষজ। ইসবগুলের ভুসির মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারি উপাদান যা আমাদের শরীরের পক্ষে অনেক উপকারি। এই উপাদানটি মূলত একটি গুল্ম জাতীয় গাছের বীজ থেকে প্রস্তুতকৃত। এর আদি আবাস ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে হলেও ক্রমে এর বিস্তৃতি ঘটেছে স্পেন, উত্তর আফ্রিকা, চীন, পাকিস্তানের কিছু অঞ্চল, ভারত এবং বাংলাদেশে। পেটের নানাবিধ সমস্যায় চমৎকার কাজ করে বলে এটি বেশ সমাদৃত। মূলত বীজের খোসাকেই আমরা ইসবগুলের ভুসি বলে চিনে থাকি। অনেকেই ইসবগুলের ভুসির দাম সম্পর্কে জানতে চায়। আজকে আমরা জানিয়ে দিবো ইসবগুলের ভুসির দাম কত।
ইসবগুলের ভুসির দাম কত
বর্তমানে ইসবগুলের ভুসির অনেক চাহিদা। ইসবগুলের ভুসি সাধারণত কোয়ালিটি হিসেবে দাম হয়ে থাকে। বর্তমান বাজারে ১০০ গ্রাম ইসবগুলের ভুসির দাম ১২০ থেকে ২২০ টাকা। এছাড়া ৫০০ গ্রাম ৬০০ থেকে ১১০০ টাকা। প্রতি কেজি ইসবগুলের ভুসির দাম ১২০০ থেকে ২২০০ টাকা। তবে এর দাম একেক জায়গায় একেক রকম হয়ে থাকে।
ইসবগুলের ভুসি অনেক রোগের সমাধান।পেট ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি অনেক সমস্যার সমাধানে ইসবগুল হতে পারে উত্তম ওষুধ।ইসবগুল এক ধরনের রেচক বা ল্যাক্সোটিভ। এক টেবিল চামচ ইসবগুলে থাকে ক্যালরি ৫৩%, ফ্যাট০%, সোডিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট (শর্করা) ১৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৯ মিলিগ্রাম।বিভিন্ন গবেষণা প্রমাণ করে যে, ইসবগুল মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের এমনকি হৃৎপিণ্ড এবং অগ্নাশয় সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সঠিক সময় সঠিকভাবে এটি খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
ইসবগুলের ভুসি সকলের কাছেই বেশ পরিচিত। বিশেষ করে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যে যারা ভূগছেন তাদের জন্য যেনো আশির্বাদ স্বরূপ। এই উপাদানটি মূলত একটি গুল্ম জাতীয় গাছের বীজ থেকে প্রস্তুতকৃত। ইসবগুলের ভুসি খাওয়ায় অনেক উপকার রয়েছে। অনেকেই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে চায়। চলুন জেনে নেই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়মঃ
২ চা চামচ ইসবগুল ১ গ্লাস ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে খেতে পারেন। খাওয়ার পর পেট-বুক জ্বালাপোড়া করা ও পেটে গ্যাস হওয়া রিফ্লাক্স রোগের উপসর্গ। খাবারের পর পাকস্থলীর গায়ে এটি আবারণ সৃষ্টি করে। ফলে এসিড থেকে শরীরে ক্ষতি কম হয়। এই খাবারের ফলে শর্করা জাতীয় খাবার কম শোষিত হয়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এটি পরোক্ষভাবে উপকার করে।
২ চা চামচ ইসবগুল ২৫০ মিলি কুসুম গরম পানির সঙ্গে ১-২ চা চামচ লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে সকালে নাস্তার পরে খেলে শরীরের ওজন কমে যায়।সারা বছর ধরে খেলে পেট ভুট ভুট করে, ডায়রিয়াও হতে পারে। একটানা ৭-১০ দিনের বেশি খাওয়া উচিত নয়। কিছু ওষুধ সেবনেও ইসবগুলের ভুসি বাধা দেয়।
এছাড়া যেকোনো দুইবেলা খাবার খাওয়ার পর ইসবগুলের ভুসি খাওয়া সবচেয়ে উত্তম। মনে রাখা জরুরি, ইসবগুলের ভুসি খেলে সারাদিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবে।
ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা ও অপকারিতা
ইসবগুলের ভুসিতে অনেক উপকার রয়েছে। ইসবগুলের ভুসি নিয়মিত খেলে প্যাটের সমস্যাসহ আরো অনেক ধরণের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সব ভালো জিনিসের উপকারের পাশাপাশি কিছু অপকারও থাকে, তেমনি ইসবগুলের ভুসির উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। অনেকেই জানতে চায় ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি। চলুন জেনে নেই ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা ও অপকারিতা।
উপকারিতাঃ
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে: ইসবগুলের ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে। এতে উপস্থিত অদ্রবণীয় ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের মল নরম করে দেয়। ফলে খুব সহজেই ইলিমিনেশন সম্ভব হয়। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি ও ১ গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করতে পারেন। কেউ যদি রোগটি পুষে রাখেন, তাহলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রক্তে কোলেস্টেরল কমায়: এ ভুসি খেলে আমাদের অন্ত্রে একধরনের স্তর তৈরি হয়। যা কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দান করে। ফলে আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাই হৃদরোগীদের জন্য দারুণ একটি খাবার এটি।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ: অনেকেই ডায়রিয়ায় ভুগে থাকেন। তাদের জন্য দারুণ টনিক হলো ইসবগুলের ভুসি ও দই। এ দুটি একসাথে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাবেন সহজেই।
ওজন কমায়: এতে ফাইবার উপস্থিত থাকায় হজম প্রক্রিয়া অনেক ধীরগতিতে হয়। তাই ক্ষুধা লাগে অনেক কম। এটি খেলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়ে যায়।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ: ইসবগুলের ভুসিতে রয়েছে জিলাটিন নামক একটি উপাদান। যা দেহে গ্লুকোজের শোষণ ও ভাঙার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে রক্তে সহজে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে না। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এ ভুসি খুবই উপযুক্ত।
অপকারিতাঃ
ইসুবগুলের ভুষি পরিমিত পরিমাণে খেলে কোন ধরনের অপকারিতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।অনেক ক্ষেত্রে ইসুবগুলের খুশি আমাদের পাকস্থলীতে টানটান ভাব সৃষ্টি করতে পারে তাই তখন ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া থেকে বিরত থাকলে সবথেকে ভালো হয়। ইসুবগুলির ভুসি খাওয়ার ফলে যদি এলার্জির সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।যাদের অন্ত্রে রোগ বা সমস্যা রয়েছে তাদের ইসুবগুলের ভুষি না খাওয়াই ভালো।টানা কিছুদিন ইসুবগুলের ভুষি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের ওজন অনেক কমে যেতে পারে তাই একটানা কখনোই ইসুবগুলের ভুষি এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহের বেশি খাওয়া যাবে না।
আশা করি আপনারা আজকে আমাদের এই পোস্ট থেকে ইসবগুলের ভুসির দাম, ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম এবং ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেড়েছেন এবং এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পুড়ো পোস্টটি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।