আলকুশি বীজের দাম কত

আলকুশি বীজের দাম কত ২০২৪

Last Updated:11 months ago

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা আলকুশি বীজের দাম সম্পর্কে আলোচনা করবো। আলকুশি হলো এক প্রকার গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর ফল দেখতে অনেকটা সীমের মতো। কিন্তু এর ফল সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে এলে চুল্কানির উদ্রেক করে। তাই এর ফল থেকে দূরে থাকা ভালো। বিভিন্ন প্রাকৃতিক চিকিৎসায় আলকুশি বহু বছর ধরে ব্যাবহার হয়ে আসছে। আলকুশি বীজ বিভিন্ন রোগ দুর করতে সাহায্য করে। এই আলকুশি বীজের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এই আলকুশি বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেকেই জানতে চায় আলকুশি বীজের দাম কত। আজকে আমরা জানিয়ে দিবো আলকুশি বীজের দাম কত

আলকুশি বীজের দাম কত

আলকুশি বীজ বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এবং এর চাহিদা অনেক। বর্তমান বাজারে ১০০ গ্রাম আলকুশি বীজের দাম ১৫০ থেকে ১৯০ টাকা। এছাড়া ৫০০ গ্রাম আলকুশি বীজের ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা। প্রতি কেজি আলকুশি বীজের দাম ১৫০০ থেকে ১৯০০ টাকা। এবং পাহাড়ি জংলি ১ কেজি আলকুশি বীজের দাম ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকার উপরে। তবে এর দাম একেক জায়গায় একেক রকম হতে পারে।

আলকুশির বৈজ্ঞানিক নাম: মুকুনা পুরিয়েন্স। ইংরেজিতে এর নাম Velvet bean, Cowitch, Cowhage, Kapikachu, Nescafe, Sea bean। এটি ফ্যাবাসি পরিবারের একটি উদ্ভিদ। বোটানিক্যাল নামের পুরিয়েন্স শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে, যার অর্থ চুলকানির অনুভূতি। ফলের খোসা ও পাতায় আছে- সেরাটোনিন, যার কারণে চুলকানির উদ্রেক হয়।মধ্য আমেরিকায় আলকুশির বীচি আগুনে ভেজে চূর্ণ করা হয় কফির বিকল্প হিসেবে। এ কারণে ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশে এর প্রচলিত নাম হচ্ছে নেস ক্যাফে। এই আলকুশী বীজ রান্না করেও খাওয়া যায়।

 

আলকুশি পাউডার এর দাম কত

সীমের মতো দেখতে আলকুশির বীজ থেকে এক ধরনের পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমান বাজারে আলকুশি ১০০ গ্রাম পাউডার এর দাম  ১৫০ থেকে প্রায় ২০০ টাকার মতো। এছাড়া ২০০ গ্রাম আলকুশি পাউডার এর দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। ৫০০ গ্রাম আলকুশি পাউডার এর দাম ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। এবং ১ কেজি আলকুশি পাউডারের দাম ১৪০০থেকে ১৮০০ টাকা। তবে এর দাম স্থান ভেদে কম বেশি হতে পারে।

আলকুশি পাউডারে রয়েছে অনেক উপকারিতা।আলকুশী পাউডার শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। স্নায়ুবিক দূর্বলতা দূর করতে আলকুশির ভুমিকা অপরিসীম। আলকুশি শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।সকল প্রকার যৌন সমস্যা সমাধনে সহায়তা

করে। মুএযন্ত্রের রোগ নিরাময়ে ও বেশ উপকার আলকুশি বীজ গুড়া মধুসহ খেলে কলেরা বা অনুরূপ মারাত্মক পেট খারাপ জনিত রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে। এছাড়াও আলকুশি পাউডার শরীরের আরো নানান উপকার করে থাকে।


আলকুশি বীজ চেনার উপায়

আলকুশি বীজ অনেক উপকারি একটি উদ্ভিদ। এটি সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় বেশি হয়ে থাকে। এই আলকুশি বীজ দিয়ে অনেক ধরনের ঔষধ তৈরি করা হয় যা শরীরের পক্ষে অনেক উপকারি। আলকুশি বীজ অনেকটা সীমের মতো দেখতে। তাই অনেকেই আলকুশি বীজ কিনতে গিয়ে ঠকে যায়। অনেকেই জানতে চায় আলকুশি বীজ কিভাবে চিনবো। চলুন জেনে নেই আলকুশি বীজ চেনার উপায়।

আলকুশি একটি গুল্ম জাতীয় গাছ। এটি শিম পরিবারের একটি উদ্ভিদ। ফল অনেকটা শিমের মতো, তবে এটি সীম না। ৪ থেকে ৬ টা বীজ থাকে। শুকনো ১০০টি বীজের ওজন হচ্ছে ৫৫-৮৫ গ্রাম। এবং বীজগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোম দ্বারা আবৃত থাকে যা সহজেই পৃথক হয়ে যায়। এগুলি ত্বকের সংস্পর্শে এলে প্রচণ্ড চুলকানি সৃষ্টি করে। কিছু আলকুশি আছে যার রোম নেই বললেই চলে সেটা কাকাণ্ডোল, Mucuna pruriens var. utilis নামি পরিচিত। বোটানিক্যাল নামের Pruriens শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে, যার অর্থ চুলকানির অণুভূতি।

 

আলকুশি গাছ কোথায় পাওয়া যায়

আলকুশি গাছ বর্তমানে অনেক বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। এর চাহিদা অনেক কারণ এর উপকারিতা অপরিসীম। অনেকেই আলকুশি গাছ সগ্রহ করতে চায় কিন্ত অনেকেই জানে না যে আলকুশি গাছ কোথায় পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেই আলকুশি গাছ কোথায় পাওয়া যায়।

আলকুশি গাছ সাধারণত লোকালয়ের বাইরে ঝোপে ঝাড়ে বেশি পাওয়া যায়। এটির বিশেষত্ব হলো এই আলকুশী গাছ একই জায়গায় বছরের পর বছর জন্মায়। আলকুশি গুল্ম জাতীয় গাছ এটি প্রায় ৮০% সীমের মতো দেখতে। আলকুশি গাছ বেশির ভাগ পাহাড়ি এলাকায় হয়ে থাকে। এর ফল বড় হওয়ার পর যখন ঝরে যায় তখন এর লোম আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক চিকিৎসকরা এই আলকুশি গাছ সংগ্রহ করে অনেক ধরণের ঔষধ বানিয়ে থাকে।


আলকুশি বীজ কোথায় পাওয়া যাবে

অনেকেই আলকুশি বীজ সংগ্রহ করতে চায় কিন্ত কোথায় আলকুশি বীজ পাওয়া যায় সেইটা না জানার কারণে আলকুশি বীজ সংগ্রহ করতে পারে না। অনেকেই জানতে চায়  আলকুশি বীজ কোথায় পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেই আলকুশি বীজ কোথায় পাওয়া যায়।

বর্তমানে অনেক হাটে বাজারে আলকুশি বীজ পাওয়া যায়। এছাড়াও এই আলকুশি বীজ পাহাড়ি এলাকায় ঝুপে ঝাড়ে হয়ে থাকে। আলকুশি গাছের ফুল গুলো দেখতে সিম ফুলের মত লালচে বেগুনি । আলকুশি ফুলগুলো সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ফোটে । আলকুশি ফলটি গৃষ্ম কালীন বৃষ্টি আর্দ্র গরম আবহাওয়ায় এই ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী । আলকুশি ফল বা ফুল যদি বেশি গরম হয় তাহলে পাতাগুলো এই গরমের প্রভাব টা সহ্য করতে পারে না। তবে বর্তমানে এটি খুজে পাওয়া অনেক কঠিন কারণ অনেকেই এই আলকুশি সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরণের ঔষধ বানিয়ে বিক্রি করে থাকে।

 

আলকুশি বীজ খাওয়ার নিয়ম

আলকুশি বীজ অনেক উপকারি একটি উদ্ভিদ যা আমাদের শরীরের পক্ষে অনেক উপকারি।অনেকেই আলকুশি বীজ খাওয়ার নিয়ম জানতে চায়। আজকে আমরা জানিয়ে দিবো আলকুশি বীজ খাওয়ার নিয়ম।

আলকুশি বীজ অনেক ভাবে খাওয়া যায়। সপ্তাহে একবার বা দুবার ১৫-২০ গ্রাম আলকুশি খাওয়া একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আদর্শ হতে পারে। যাইহোক, প্রতিদিন ৫ গ্রাম দিয়ে শুরু করুন। এই পরিমাণ আপনাকে আপনার শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে দেয়। এছাড়া আপনি যদি বাতের ব্যথার সমস্যায় ভুগেন এবং আপনার যদি এই কারণে শরীর দুর্বল হয়ে যায় তাহলে আলকুশির বীজ চিনি ও দুধসহ সেদ্ধ করে নিয়মিত খেতে হবে। সর্দি কাশি বা হালকা জ্বর থাকলে আলকুশির শিকড়ের রস এক মাস খেতে হবে।


আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার নিয়ম

আলকুশি বীজকে দীর্ঘদিন ধরে রোধে শুকিয়ে গুড়ো করে পাউডার বানানো হয়। তার পর সেই পাউডার বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেকেই জানতে চায় আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার নিয়ম। চলুন জেনে নেই আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার নিয়ম।

আলকুশি পাউডার এ পাউডার রুটি বানানোর সময় আটার সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও গরম দুধ বা পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে সব থেকে ভালো হয় প্রতি রাতে একবার ১ চা চামুচ পরিমাণ আলকুশি বীজ পাউডার হাফ গ্লাস দুধ কিংবা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। প্রয়োজন বোধে মধু বা মিছরি মিশিয়ে নিতে পারেন । এছাড়াও জার জার সুবিধা মতো অন্যান্য উপায়েও খেতে পারেন।


আলকুশি বীজের উপকারিতা

আলকুশি বীজ এটি প্রায় সকলের কাছে অনেক পরিচিত কারণ এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। আলকুশি বীজের আরো অনেক নাম রয়েছে তবে বেশির ভাগ মানুষ এটিকে আলকুশি নামে চিনে থাকে। অনেকেই আলকুশি বীজের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চায়। চলুন জেনে নেই আলকুশি বীজের উপকারিতা কিকি।

উপকারিতাঃ

আলকুশির বীজ যদি আপনি চিনি ও দুধের সাথে  এই  বীজ  প্রতিদিন একবার সিদ্ধ করে খান তাহলে আপনার শরীরের মধ্যে যদি কোন শারীরিক দুর্বলতা  দূর করে , স্নায়বিক দুর্বলতা দূর করে।

বিষাক্ত পোকা মাকড়ের কামড়ে যদি অধিকাংশ যন্ত্রণা হয় ও তাহলে এই বীজের গুড়া ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিলে অনেকাংশে ব্যথা কমে যাবে ।

যদি  কোন ব্যক্তির  আমাশয় থেকে থাকে তাহলে  এক মাস পর্যন্ত আলকুশি গাছের শিকড়ের রস এক  চামচ খেলে  আমাশয় শরীর ভালো হয়ে যায় ।

আলকুশি গাছের পাতার রস ফোঁড়ায় দিলে সেটি ফেটে যায় ।

যদি আপনার বাড়িতে কোন পশু পাখি থাকে আর সেই পশু পাখির গায়ে যদি কোন ক্ষত স্থান  থাকে সেই স্থানে যদি আলকুশি শিকড়ের রস লাগিয়ে দিলে দ্রুত সেরে যাবে । এর রস খেলে সর্দি কাশি জ্বর সেরে যায়,এবং মূত্রতন্ত্রের রোগ  নিরাময়ে বেশ কার্যকর। এছাড়াও এর আরো নানাভিদ উপকার থাকতে পারে।


আশা করি আপনারা আজকে আমাদের এই পোস্ট থেকে বিশেষ একটি ভেষজ উদ্ভিদ আলকুশি বীজ এর দাম, আলকুশি বীজের পাউডারের দাম, আলকুশি বীজ খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেড়েছেন। আমাদের এই পোস্টে আলকুশি বীজ সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া আছে। আশা করি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পুড়ো পোস্টটি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ার ধন্যবাদ।


একই ধরনের পোস্ট

×