হাঁসের ডিমের দাম কত ২০২৪
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা হাঁসের ডিমের দাম সম্পর্কে আলোচনা করবো। ডিমে অনেক উপকারিতা আছে আমরা সকলেই জানি তবে অন্যান্য ডিমের থেকে হাঁসের ডিমে অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে। সাধারণত মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিম আকারে বড়। খোসাটাও তুলনামূলকভাবে শক্ত। আকারে বড় হওয়ার কারণে হাঁসের ডিমের কুসুমও বড় হয়। হাঁসের ডিম বিভিন্ন রঙের হয়। তবে খোসা শক্ত হওয়ার কারণ ফাটাতে অসুবিধা হয়। কিন্তু এই কারণেই হাঁসের ডিম প্রায় ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত রেখে খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই জানতে চায় হাঁসের ডিমের দাম কত। আজকে আমরা আপনাদের জানিয়ে দিবো হাঁসের ডিমের দাম কত।
হাঁসের ডিমের দাম কত
হাঁসের ডিমের অনেক গুনাগুন থাকায় বর্তমানে হাঁসের ডিমের অনেক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া আগের তুলনায় বর্তমানে হাঁসের ডিমের দাম কিছুটা বেশি। বর্তমান বাজারে প্রতি পিচ হাঁসের ডিমের দাম ১৭ থেকে ২০ টাকা এবং প্রতি হালি হাঁসের ডিমের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। অনেকেই বেশি পরিমাণে হাঁসের ডিম কিনতে চায়। বর্তমানে ৫ হালি হাঁসের ডিমের দাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এছাড়া ১০ হালি হাঁসের ডিমের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এবং ২০ হালি হাঁসের ডিমের দাম ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। তবে আগে এর থেকে অনেক কম দামের হাঁসের ডিম পাওয়া যেতো এবং বর্তমানে এই ডিমের দাম কম বেশি হতে পারে।
হাঁসের ডিমের পাইকারি দাম কত
ডিমের দাম বাড়ার কারণে অনেকেই পাইকারি দামে হাঁসের ডিম কিনতে চায়। পাইকারি দামে কিনতে হলে অবশ্যই আপনাকে বেশি পরিমাণে কিনতে হবে। বর্তমান বাজারে প্রতি হালি হাঁসের ডিম পাইকারি দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া ৫ হালি হাঁসের ডিম পাইকারি দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ১০ হালি হাঁসের ডিম পাইকারি দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। ২০ হালি হাঁসের ডিম পাইকারি দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এবং ৫০ হালি হাঁসের ডিম পাইকারি দাম ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। তবে বর্তমানে এর দাম কম বেশি হতে পারে।
হাঁসের ডিমের অপকারিতাঃ
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা, যদিও এর সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, তবে সবাই হাঁসের ডিম খেতে পারে না।
এলার্জি
প্রোটিন একটি সাধারণ অ্যালার্জেন। যদিও বেশিরভাগ ডিমের অ্যালার্জি শৈশবে অদৃশ্য হয়ে যায়, এটি শিশু এবং শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ খাদ্য অ্যালার্জিগুলির মধ্যে একটি।
ডিমের অ্যালার্জির লক্ষণগুলি ত্বকের ফুসকুড়ি থেকে বদহজম, বমি বা ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে, একটি খাদ্য অ্যালার্জি অ্যানাফিল্যাক্সিসের কারণ হতে পারে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে প্রভাবিত করতে পারে এবং জীবন-হুমকি হতে পারে।
হাঁস এবং মুরগির ডিমের প্রোটিন একই রকম কিন্তু অভিন্ন নয়, এবং যাদের এক ধরনের ডিমে অ্যালার্জি আছে তাদের অন্য ডিমের সাথে একই সমস্যা নাও হতে পারে। তাই মুরগির ডিমে অ্যালার্জি থাকলেও হাঁসের ডিম খেতে পারেন।
যাইহোক, আপনার যদি অন্য ডিমের প্রতি পরিচিত বা সন্দেহজনক অ্যালার্জি থাকে তবে হাঁসের ডিম খাওয়ার আগে নিরাপত্তার কারণে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
হৃদরোগ
হাঁসের ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশ বেশি, তবে বেশিরভাগ গবেষণায় একমত যে ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল সুস্থ মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় না।
ডিমের কুসুম কিছু লোকের মধ্যে LDL (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে দেখা গেছে, কিন্তু HDL (ভাল) কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়ায়।
যাইহোক, উচ্চ কোলেস্টেরল সামগ্রীর কারণে , হাঁসের ডিম সবার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনার ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে।
কিছু গবেষণা এও পরামর্শ দেয় যে ডিমের কুসুমে থাকা কোলিন হৃদরোগের আরেকটি ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কোলিনকে ট্রাইমেথাইলামাইন এন-অক্সাইড (TMAO) নামক যৌগে রূপান্তর করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে যাদের রক্তে TMAO এর মাত্রা বেশি তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যারা উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার খান তারা আরও TMAO তৈরি করে।
যাইহোক, এটি স্পষ্ট নয় যে TMAO একটি ঝুঁকির কারণ বা এর উপস্থিতি হৃদরোগের ঝুঁকির নির্দেশক কিনা।
হাঁসের ডিমে কি এলার্জি আছে
হাঁসের ডিমের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সকলেই কম-বেশি জানি।হাঁসের ডিম খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক বেশি উপকার হয়। কিন্ত উপকারের পাশাপাশি হাঁসের ডিমে কিছু অপকারিতাও রয়েছে। এমনকি অনেকের এলার্জি হতে পারে। অনেকেই জানতে চায় হাঁসের ডিমে কি এলার্জি আছে। উত্তর হলো হ্যা হাঁসের ডিমে এলার্জি আছে। তবে অনেকেই এলার্জির লক্ষন গুলো বুঝতে পারে না। চলুন জেনে নেই হাঁসের ডিমের এলার্জির লক্ষন গুলো।
১. ত্বকের প্রদাহ বা আমবাত- সবচেয়ে সাধারণ ডিম এলার্জির প্রতিক্রিয়া।
২. অনুনাসিক কনজেশন, সর্দি এবং হাঁচি- এলার্জিক রাইনাইটিস।
৩. জারক উপসর্গ। যেমন- বমি বমি ভাব, মাথা ঘুরানো ইত্যাদি।
৪. হাঁপানির লক্ষণ এবং উপসর্গ। যেমন- কাশি, বুকে টান, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।
এছাড়াও আরো অনেক লক্ষন থাকতে পারে।
একটি হাঁসের ডিমে কত ক্যালরি
মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিম আকারে বড় হয়। এ ছাড়াও হাঁসের ডিমের খোলা মুরগির ডিমের তুলনায় বেশি শক্ত হয়। আকারে বড় হওয়ার কারণে হাঁসের ডিমের কুসুমও বড় হয়। যদিও, টাটকা ডিম খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আমরা সকলেই জানি হাঁসের ডিমে অনেক উপকারিতা রয়েছে। হাঁসের ডিমে রয়েছে অনেক ক্যালরি। তবে অধিকাংশ মানুষ জানে না হাঁসের ডিমে কতটুকু ক্যালরি রয়েছে। চলুন জেনে নেই একটি হাঁসের ডিমে কত ক্যালরি।
১০০ গ্রাম হাঁসের ডিম থেকে ১৮৫ কিলো ক্যালরি এনার্জি পাওয়া যায়। যেখানে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিম থেকে পাওয়া যায় ১৪৯ কিলো ক্যালরি এনার্জি। কার্বহাইড্রেট ও মিনারেলের পরিমাণ সমান হলেও হাঁসের ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ সামান্য বেশি থাকে। উভয়ের ডিমেই সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, দস্তা, তামা, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন থাকে। তবে অন্যান্য ডিমের তুলানায় হাঁসের ডিমে পুষ্টিগুন কিছুটা বেশি থাকে।
আশা করি আপনারা আমাদের এই পোস্ট থেকে হাঁসের ডিমের দাম, পাইকারি দাম, উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আরো অনেক কিছু জানতে পেড়েছেন। আমাদের এই পোস্টে হাঁসের ডিম সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া আছে। আশা করি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পোস্টটি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।