নাশপাতি ফলের দাম কত ২০২৪
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমরা নাশপাতি ফলের দাম কত এই সম্পর্কে আলোচনা করবো। নাশপাতি ফল প্রাচীন বিশ্বের উৎপন্ন উদ্ভিদ হিসেবে এটি ইউরোপের পশ্চিমাংশ এবং উত্তর আফ্রিকার পূর্বাংশ থেকে শুরু করে এশিয়া মহাদেশের উপকূল অঞ্চল ও নমনীয় তাপমাত্রার এলাকাসমূহে দেখা যায়। মাঝারি আকৃতির গাছরূপে এটি ১০ থেকে ১৭ মিটার পর্যন্ত উচ্চতাসম্পন্ন। প্রায়শঃই এগুলো লম্বা ও সরু আকৃতির হয়ে থাকে। বর্তমানে নাশপাতি ফলের অনেক চাহিদা রয়েছে। অনেকেই জানতে চায় নাশপাতি ফলের দাম সম্পর্কে। আজকে আমরা আমাদের এই পোস্টের মাধ্যেমে জানিয়ে দিবো নাশপাতি ফলের দাম কত।
নাশপাতি ফলের দাম কত
নাশপাতি অনেক সুস্বাদু একটি ফল। বর্তমানে বাংলাদেশে এই ফলের অনেক চাহিদা রয়েছে । বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি নাশপাতি ফলের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এছাড়া ৫ কেজি নাশপাতি ফলের দাম ১৫০০ থেকে ১৭৫০ টাকা। এবং ১০ কেজি নাশপাতি ফলের দাম ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। তবে এর দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
নাশপাতি খাওয়ার নিয়ম
নাশপাতি! আমাদের অনেকেরই পছন্দের ফলের তালিকায় এই নামটি হয়ত বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তবে সেটা স্বাদের স্বার্থ অপেক্ষা দেহের পুষ্টি চাহিদায় বেশি উল্লেখ্য। আমরা বিভিন্ন সময়ই বিভিন্ন মৌসুমী কিংবা বিদেশী ফল খেয়ে থাকি দেহের পুষ্টির চাহিদা রক্ষায়।তবে বাকি সব ফলের মধ্যে নাশপাতির উপকারিতা কিন্তু মোটেও অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। অনেকেই নাশপাতি খেয়ে থাকে কিন্ত অধিকাংশ মানুষ নাশপাতি খাওয়ার নিয়ম জানে না। অনেকেই জানতে চায় নাশপাতি খাওয়ার নিয়ম। চলুন জেনে নেই নাশপাতি খাওয়ার নিয়ম।
নিয়মঃ
নাশপাতি ফল খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই বললেই চলে। আমরা দিনের যেকোনো সময় নাশপাতি খেতে পারি তবে দিনের শুরুতে না খেয়ে দিনের শেষে খেলে বেশি ভালো। অর্থাৎ আপনি যদি বিকেল সন্ধ্যার দিকে নাশপাতি খেতে পারেন তাহলে সেটা শরীরের পক্ষে বেশি ভালো। এছাড়া নিয়মিত প্রতিদিন একটা করে নাশপাতি খাওয়া শুরু করলে দৈনিক ফাইবারের চাহিদার প্রায় ১৮ শতাংশ পূরণ হয়। ফলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়ার মধ্যে দিয়ে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আসলে ফাইবার হল এমন একটি উপাদান যা যে কোনও ধরনের পেটের রোগের উপশমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া আরো অনেক ভাবে এই ফল খাওয়া যেতে পারে।
নাশপাতি ফলের উপকারিতা
আপেলের মতো দেখতে অনেকটাই কিন্তু আপেল নয়। স্বাদেও রয়েছে ভিন্নতা। খোসা একটু মোটা, তবে খোসাসহই খাওয়া যায়। খেতে কিন্তু ভীষণ মিষ্টি। বলছি নাশপাতির কথা। নাশপাতি অনেকে খেয়ে থাকলেও এর উপকারিতা সম্পর্কে সবার ধারণা নেই। এই নাশপাতি ফলের অনেক উপকার রয়েছে। অনেকেই জানতে চায় নাশপাতি ফলের কি কি উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নেই নাশপাতি ফলের উপকারিতা।
উপকারিতাঃ
** কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নাশপাতির জুড়ি নেই। বিকেলে বা রাতে খাওয়ার পর নাশপাতি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
** খুশকি ও পেটের পীড়ার কারণে মাথার চুল পড়ে গেলে সিকি কাপ নাশপাতির রস দুই সপ্তাহ খেলে চুল পড়া ও খুশকি দূর হয়।
** উচ্চমাত্রায় মিনারেল থাকার কারণে নাশপাতি দেহে ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়। এটি হরমোন উৎপাদন এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানের ১০ শতাংশ নাশপাতিতে বিদ্যমান।
** নাশপাতিতে আছে ৬ গ্রাম সলিউবল ফাইবার, যা আপনার কোলেস্টেরল কমায় ও আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
** এটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে ও রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
** করোনারি থ্রম্বোসিস, হার্ট ব্লক, মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্যাকশন ইত্যাদি রোগে প্রতিদিন ২-৩ টুকরো নাশপাতি খেলে খুবই উপকার হয়।
এ ছাড়া দাঁতের মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে নাশপাতির রস ও অল্প ফিটকিরি মিশিয়ে রেখে সকালে খেলে মাড়ির ক্ষয় পূরণ হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কার্যকরী নাশপাতি। এতে পাওয়া যায় প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি। নিয়মিত নাশপাতি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যে কারণে বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হয়। এছাড়া এই ফল এর আরো অনেক উপকারিতা থাকতে পারে।
নাশপাতি ফলের অপকারিতা
নাশপাতি একটি প্রমুখ ফল যা খুব সহজেই সনাতন বাঙালি খাবার হিসাবে পরিচিত। এটি একটি মধুর রস পূর্ণ ফল। যা সাধারণত বছরের বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাসের মধ্যে পাওয়া যায়। নাশপাতির জন্য বাংলাদেশে প্রধানত, যার রাজাস্থান, সিলেট উল্লেখযোগ্য। এটি মূলত আলফন্সো ফলের বন্ধন রয়েছে, যা একটি প্রকৃতিসঙ্গত ফল বলে মনে করা হয়। আমরা সকলেই জানি যে নাশপাতি ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে তবে এর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও রয়েছে। চলুন জেনে নেই নাশপাতি ফলের অপকারিতা।
অপকারিতাঃ
অতিরিক্ত মাত্রায় Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি খাওয়ার ফলে পেট খারাপ ডায়রিয়া ফোলা ভাব মাথা ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে।
Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি মুত্রবর্ধন বৈশিষ্ট্যের জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ শোষণ করার ক্ষমতা শরীরে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি অ্যালার্জির জন্য নাকে প্রদাহ, হাঁপানি, চুলকানি, ফোলা ভাব ইত্যাদি সমস্ত সমস্যা হতে পারে।
ব্রোয়েলড নেপাল স্টেম খাওয়ার ফলে প্রচন্ড হাইপোগ্লাসসেমিক প্রভাব থাকতে পারে। Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতির কাঁচা ডালপালা এবং পাকা ফল খাওয়ার সময় এটি দেখা যায় না।
Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে উচ্চ ফাইবার হজমে অস্বস্তি হতে পারে, যেমন ফোলা, গ্যাস এবং ডায়রিয়া।
Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি ফলের মধ্যে চিনির পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে বেশি। তাই Prickly Pear অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পেতে পারে। এটি ডায়াবেটিসযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য বা যারা তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা পরিচালনা করার চেষ্টা করছেন তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতির মধ্যে রয়েছে অক্সালেট। যেটা বেশ কিছু ব্যক্তির কিডনিতে পাথর গঠনে অবদান রাখতে পারে।
Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি বেশ কিছু ওষুধের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। যেমন ডায়াবেটিসের ওষুধ ও কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ। যদি কোন ব্যক্তি কোনো ওষুধ গ্রহণ করেন তাহলে Prickly Pear বা কাঁটা যুক্ত নাশপাতি খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও নাশপাতি ফলের আরো অপকারিতা থাকতে পারে।
আশা করি আপনারা আমাদের এই পোস্ট থেকে নাশপাতি ফলের দাম, নাশপাতি ফল খাওয়ার নিয়ম, নাশপাতি ফল খাওয়ার উপকারিতা ও নাশপাতি ফলের অপকারিতা জানতে পেরেছেন। আশা করি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পুড়ো পোস্টটি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।